নিজস্ব প্রতিবেদক :: দ্বিতীয় দফায় কক্সবাজার থেকে আরো ১ হাজার ৮০৪ জন রোহিঙ্গা নোয়াখালীর ভাসানচরে পৌঁছেছে। আজ মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রোহিঙ্গাদের বহনকারী নৌবাহিনীর সাতটি জাহাজ ভাসানচরে পৌঁছয়।
এর আগে প্রথম দফায় সফলভাবে এক হাজার ৬৪২ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দ্বিতীয় দফায় কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম হয়ে আজ ভাসানচরের উদ্দেশে যাত্রা করে ১৮০৪ জন। এদের মধ্যে ৮৪৮ জন শিশু ও ৫২৩ জন নারী রয়েছেন।
কক্সবাজারের উখিয়া থেকে গতকাল দুপুরে প্রথম দফায় ১৩টি যাত্রীবাহী বাসে ওঠে ৫৯৫ রোহিঙ্গা। তাদের গাড়িবহরের সামনে পুলিশের কড়া পাহারা ছিল। এর প্রায় তিন ঘণ্টা পর আরো ১১টি বাসে ওঠে ৫৩৯ জন। পর্যায়ক্রমে ৩৩টি বাসযোগে ৪২৭টি পরিবারের নারী-পুরুষ ও শিশুরা কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়।
গতকাল সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্প থেকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাসে করে রোহিঙ্গাদের চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়। রাতে তাদের রাখা হয় বিএএফ শাহীন কলেজ মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পে।
আজ মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় নৌবাহিনীর জেটি থেকে প্রথম জাহাজটি রওনা হয়। এরপর ভাসানচরের উদ্দেশে ছেড়ে যায় রোহিঙ্গাবাহী নৌবাহিনীর বাকি জাহাজগুলো।
তল্পিতল্পা নিয়ে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছেড়ে নতুন গন্তব্য নোয়াখালীর ভাসানচরে পৌঁছার জন্য এসব রোহিঙ্গা আগে থেকেই নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ করেছিল। আজ দুপুরে ভাসানচরে পৌঁছার মধ্য দিয়ে তাদের প্রায় ২৪ ঘণ্টার কক্সবাজার-নোয়াখালী সফর শেষ হয়। নতুন বসতিস্থল ভাসানচরে আগে থেকেই সরকার আধুনিকভাবে রোহিঙ্গাদের জন্য ঘর নির্মাণ করে রেখেছে।
রোহিঙ্গা স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় এর আগে ৪ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো ভাসানচরে নেওয়া হয় এক হাজার ৬৪২ রোহিঙ্গাকে। তারা সেখানে পৌঁছার পর স্বজনদের কাছে বার্তা পাঠায় যে ভাসানচরের পরিবেশ ভালো ও নিরাপদ। তাদের সেই বার্তায় আশ্বস্ত ও উদ্বুদ্ধ হয়ে আরো প্রায় সাত হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচরে যাওয়ার জন্য নিবন্ধনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে বলে জানা গেছে।
এদিকে নিবন্ধন প্রক্রিয়া এবং গতকাল দুপুরে দুই দফায় ২৪টি বাসে যাত্রা করা রোহিঙ্গাদের বিষয়ে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের (আরআরআরসি) পক্ষ থেকে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। প্রথম দফা রোহিঙ্গা স্থানান্তরের সময় প্রশাসনের তরফ থেকে যেভাবে তথ্য প্রচার করা হয়েছিল, দ্বিতীয় দফায় স্থানান্তরের বিষয়ে প্রশাসন থেকে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই।
দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, দ্বিতীয় দফায় এক হাজার ৮০৪ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে পাঠানো হয়েছে। তাদের আজ দুপুরের মধ্যেই ভাসানচরে পৌঁছে যাওয়ার কথা রয়েছে। স্থলভাগে পুলিশ-র্যাবের নিরাপত্তা এবং সাগরপথে নৌবাহিনীর সদস্যরা রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা দিয়ে ভাসানচরে পৌঁছে দিচ্ছে।
একই বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মিলন মাহমুদ গতকাল সোমবার বলেছিলেন, ‘আজ (গতকাল সোমবার) রাতের মধ্যে রোহিঙ্গাদের নিয়ে আসা বাসগুলো পৌঁছেছে বিএএফ শাহীন কলেজে। সেখানে তাদের খাওয়া ও রাতযাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরপর আগামীকাল (আজ মঙ্গলবার) সকালে নৌবাহিনীর জাহাজে করে তাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হবে।’
পাঠকের মতামত: